সালমা সুলতানা
অথচ এমনও হতে পারত —
সুনসান নীরবতার ছোট্ট লোকালয়ে একটি টিনশেড ঘর আমাদের।
যেখানে ভালবাসার বৈভবে অহংকারী দুটো মানুষের সরল দিনমান।
সামনেই খোলা উঠোন, অদূরে সামনর রাস্তায় দেবদারু,
ছাতিম গাছ, ঘরের কোণে বুনোঝোপের নিজ দাবিতে বেড়ে ওঠা।
উঠোনে শুকোতে দেওয়া দুটো কাপড় থাকত পাশাপাশি,
কখনো পলকা হাওয়ায় কাপড়দুটো জড়িয়ে যেত তুমুলভাবে।
দুজনের থাকত একটি থালা, একটি গ্লাস,একটি মাত্র বালিশের ভাগাভাগি।
না-ই থাকত ঝকমারি জীবনের বিলাসী রসদের গোলযোগ।
অতটা দূরের আকাশ নয়, সমুদ্র নয়, দীঘির জলেই হতো আমাদের নিত্য অবগাহন!
কার কী ক্ষতি হতো তাতে, হতোই যদি এমন!
এমনও হতে পারতো —
আষাঢ়ে-সন্ধ্যা, কোথাও কেউ নেই, নেই কোন আলো।
জোনাকিরাও কপাট বন্ধে গোপন অভিসারে।
ঘরহারা পাখি তারস্বরে ভাঙে ভেজাসন্ধ্যার মৌনতা।
জানালার ওধারে অভিমানের বেনোজলে ভেসে যেত তোমার বুকের সিথান, নয়তো লুটাতো সেথায় মুক্তবেণী, খসে পড়ত অবাধ্য আঁচল আমার।
তুড়িতে উড়িয়ে দিলেই একফোটা জল, পরাজয় হত হাজারও অভিযোগের,
হতেই তো পারত এমন! তাতে কী এমন ক্ষতি হতো জগতের!
হতে পারতো এমনও—
ভীষণ ব্যস্ত তুমি। দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা! অপেক্ষায় থেকে থেকে
আমার চোখ ছলছল, ধরাগলা।
বুঝে যেতে তুমি পাখির পালকে জমেছে অভিমানের বিষাদ।
অমনি সর্বগ্রাসী অনলে পোড়াতে অভিমান আমার!
হতোই যদি এমন, তাতে কার কী এমন বয়ে যেত!
হতেই তো পারতো—
অসহ্য জোছনা উঠোন জুড়ে। চাঁদ আর দেবদারু পাতা মেতেছে আলো-আঁধারির খেলায়।
তোমার বুকে ঠেস দিয়ে বসে আছি ঘরের দাওয়ায়।
সন্ধ্যারাত গড়িয়ে মধ্যরাত, শেষরাত।
বসেই আছি আমরা সব ভুলে।
হঠাৎ একমুঠো সিক্ত