নারী
নারী! সে তো বড় রসালো উর্বর জমি;
নিমগ্ন কর্ষণে ভরে যায় বুক তার
ফসল সম্ভারে।
বাহু পেশী নয়,
অনুরাগে উজ্জীবিত
হৃদয়ের পেশী প্রয়োজন খুব বেশী;
আবাদ করতে ভূমি
যদি চায় কৃষকের মন।
জল ঢালতে হয় না,
কর্ষণমগ্ন কৃষক স্পর্শ করতেই
ভূমি সিক্ত হতে থাকে;
কৃষক বিভোর হলে
ভূমি বুকে জলাশয় হয়,
আহ্লাদে জলের তলদেশ থেকে
ঢেউ উঠে দুলে দুলে
তীর থর থর কাঁপে!
বিমুগ্ধ সন্তরণে কৃষক গা ভাসায় জলে।
আসক্ত কর্মঠ কৃষক নাগর
কাদা-মাটি-জল একাকার করে
বুনে যায় রত্ন শ্রেষ্ট বীজ জলাশয় তীরে।
তৃপ্ত শান্ত ভূমি,
স্বযত্নে বুকে রাখে বীজ উষ্ণ আদরে;
ভূমি ও কৃষকের প্রতিক্ষায় কাটে প্রহর
ফসলের পূর্ণতা বিকাশে।
আমি ততটা ভালোবাসি তোমাকে
প্রেয়সী আমার,
আমি এতটা ভালবাসি তোমাকে;
যতটা ভালবাসায়
মেঘমালা জমে থাকে
আকাশের বুকে,
যতটা ভালবাসায়
চিরকাল প্রবাহিত নদী
সমুদ্রের পানে,
যতটা ভালবাসায়
কৃষকের মাঠে ফলে
সোনালী ফসল,
যতটা ভালবাসায়
বসন্তে যৌবন আসে
শাখায় শাখায়,
যতটা ভালবাসায়
জোছনা চুম্বন করে
রাতের শরীর,
যতটা ভালবাসায়
পূর্বাশায় রঙ মাখে
প্রভাত কিরণ;
প্রেয়সী আমার,
আমি ততটা ভালবাসি তোমাকে।
চোখ
তোমার চোখের ভেতর থেকে কাব্যিক শব্দাবলী
নরম ঝর্ণার মত ছল ছল নির্ঝরিত হয় ;
তোমার চোখের ভেতর থেকে মর্মকথার মালা
আকাশ পানে হংস সারির মত উড়ে উড়ে যায়;
তোমার চোখের ভেতর স্বপ্নময় কুমোদী ফুটে
জন্ম দেয় অনুপম কবিতার প্রাণময় কথা;
তোমার চোখের মাঝে সৌন্দর্যের যশোগান আছে
আছে প্রেমের আরাধনা, আছে প্রশান্তির আরতি;
তোমার চোখে আছে মন্থন, আছে শ্রাবণ বর্ষণ
আছে কর্ষণ আছে রোপন আছে সজীব ফলন;
তোমার চোখ তমীস্রার আদিম গুহা হতে এসে
অনন্তকাল ধরে সুখময় প্রশ্রয় দান করে;
তোমার চোখ সর্বোপরি তৃষ্ণার সু-শীতল জল
তোমার চোখে জেগে উঠে আমার প্রতিক্ষার ভোর।