যখন কোনভাবেই আর বোঝাতে পারলাম না তোমায়,
মনের খাতায় লেখা অব্যক্ত পদাবলীর শুরু থেকে
শেষ অব্দি প্রতিটি শব্দ তোমার জয়গানে মুখর,
যখন কোনভাবেই আর পৌঁছুলো না আকুতি আমার
তোমার মনের চৌহদ্দিতে, ঝড় তোলেনি আমার
আর্তনাদ তোমার অলিন্দ নিলয়ে !
তখন আমারই জানতে ইচ্ছে করছে — তুমি কি আদৌ
ভালবেসেছিলে আমায়?
নাকি মিছে রাগ,অভিমানের নামে গল্প সাজিয়েছো ছেড়ে যাবার!
নাকি কাছে টেনে ছিলে ছুঁড়ে ফেলতে আমায়,প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছিলে বলে!
ভালবাসলে কি প্রতিশোধ নেয়া যায়! রাগ হয়,কষ্ট হয়,অভিমান হয়
আবার দু’জনের বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে কেটে যায় কালো মেঘ
নতুন সূর্যালোকে আলোকিত হয় তাদের একান্ত পৃথিবী!
আমি তো মেনেই নিয়েছিলাম—এ শহরে আমার আর কেউ নেই,
আমিও আর নই কারো,ব্যস্তদিনের শেষে কেউ খুঁজবে না আর
এ মুখ! তাই তো সম্পর্কের সীমানায় দিয়েছিলাম শক্ত প্রাচীর।
যদি আর নাই পার ফিরতে—
তবে কেন বুকের ভেতরে গড়েছিলে কুহকী মায়ার অট্টালিকা!
তবে কেন আবার এসেছিলে কাছে!
মিছে মায়ায় বাঁধতে আমায়,মিথ্যে স্বপ্নে ভাসাতে আমায়!
ভালবাসায় অন্ধ চোখ আমার,কোন প্রতিহিংসা দেখেনি ও চোখে!
তাইতো বোকা বানাতে পেরেছো আরো একবার।
এবার দাঁড় করিয়েছো আমায়,আমার মুখামুখি,আমার ভালবাসার মুখোমুখি!
আজ হাজারো প্রশ্নের অস্হির ছোটাছুটি তোমার প্রতিজ্ঞার উঠোন জুড়ে—
এতটাই কি করেছিলাম ভুল! এতটাই কি দিয়েছিলাম কষ্ট!
যেখান থেকে কোনভাবেই আর ফেরা যায় না!
কোনভাবেই বরফ গলে হয়না শীতল জল!
তবে কী!
কখনোই ভাসিনি দুজনে,ভাসাইনি ভেলা,যুগল প্রেমের জলস্রোতে,
পুড়িনি দুজন একই উননে,মেটাই নি তেষ্টা সবটুকু পিয়ে!
তবে কি ভুলে ছিড়ে গেল আমাদের প্রিয় বীণার তার
শুকিয়ে গেল মায়াবতী নদীর সবটুকু জল!
দেখে নিও একদিন আমিও হয়ে যাব—
জলের মত শান্ত,পাহাড়ের মত স্তব্ধ,রাতের মত গাঢ় অন্ধকার
হয়ে যাব নিরব,নিথর চিরদিনের মত —
আর্তনাদে আর্তনাদে,ভীষননিনাদে।
কোথাও আর খুঁজে পাবে না আমায় !!
বুকের ভেতর বিরামহীন বর্ষণ নিয়ে দিগ্বিদিক খুঁজবে আমায়,
একটু ছুঁয়ে দেবার জন্য,শুধু একটিবার করতলে মুখটি আমার নেবার জন্য।
তখন কোনভাবেই আর পৌঁছুবে না তোমার আর্তনাদ আমার কাছে
তোমার দীর্ঘশ্বাসের ঝড়ো হাওয়ায় একটুও টলবে না
‘আমি’ নামের মহীরুহ।
তখন যে হয়ে যাব আমি আকাশের খোঁপায় শুভ্র তারার ফুল,
হয়ে যাবো অন্য নদীর অন্য জলের ঢেউ,
হয়ে যাব অন্য দেশের অচেনা অন্য কেউ!!