প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে অব্যাহত রাখার জন্য শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখাটা জরুরি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসকে আমরা প্রশ্রয় দেব না। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। কারণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছাড়া একটি দেশের উন্নয়ন সম্ভব না।
প্রধানমন্ত্রী ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সবার প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, আমি জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই কারণ সবাই আমার ডাকে সাড়া দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন।
শনিবার বিকেলে তার সরকারি বাসভবণ গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নিয়ে মত বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি একটু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই বিএনপির কোন এক নেতা কিছুদিন আগে বলেছিলেন-আওয়ামী লীগ আন্দোলনের কী দেখেছে, নভেম্বর মাসে হবে আসল আন্দোলন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের আন্দোলন যদি হয় আবারও মানুষ খুন করা, মানুষের ঘরবাড়ি পোড়ানো, সংখ্যালঘুদের ওপর আঘাত-নির্যাতন করা এবং এর মাধ্যমে দেশের সম্প্রীতি নষ্ট করা- সেই আন্দোলন কোনদিনও মানুষের সমর্থন পাবে না। এই পথ জনগণের কল্যাণ বয়ে আনবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, আমার আহ্বান থাকবে- আমাদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে আমাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে হবে। এটা আমাদের সবার দায়িত্ব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আমাদের ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। প্রত্যেক ধর্মের মূল বাণীও তাই। এখানে সব ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মকর্ম পালন করতে পারবেন।
এটাই ইসলামের কথা এটাই আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) কথা এবং আমরা সেটাই মেনে চলি। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মানুষ খুন করা কিন্তু ইসলামের পথ না।
প্রধানমন্ত্রী এদিন রাজশাহী বিভাগের ৫টি স্থানের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন। বিভাগের ৮টি জেলার ২ হাজার ৯৮১টি গ্রামে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই ভিডিও কনফারেন্সের অনুষ্ঠানটি দেখানো হয়।
এ সময় গণভবনে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক কবির বিন আনোয়ার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি চাই আমাদের দেশের সবাই, যেমন মসজিদের ইমামরা জুমার নামাজের আগে যে খুৎবা দেন সেখানে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সম্পর্কে আমাদের ইসলাম ধর্মে কী আছে, নবীজি কী বলেছেন, কোরআন শরীফে কী বলা আছে, তা মানুষের কাছে তুলে ধরবেন।
বিষয়টা মানুষকে ভালোভাবে জানাতে হবে। যাতে কেউ বিপথে না যায়। এ ধরণের আত্মঘাতী পথে পা না বাড়ায়।
তিনি বলেন, আমি অভিভাবক, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মজীবী, সাধারণ জনগণ সবাইকে আহবান জানাবো- সবার যৌথ উদ্যোগেই আমরা বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলের উল্লেখ করে বলেন, আমাদের মনে আছে রাজশাহীতে বাংলাভাই সৃষ্টি।
প্রকাশ্য দিবালোকে সন্ত্রাসীরা মিছিল করছে ট্রাকে। পুলিশ তাদের পাহারা দিচ্ছে। বিএনপির মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী তাদের মদদ দিচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাই মিলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য এর আগেও আমি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশের ৮টি বিভাগের ৬৪টি জেলার সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি।
তখনও আমি আহ্বান করেছিলাম, জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে দেশবাসীকে আহবান করেছিলাম যে, সবাই সম্মিলিতভাবে আমাদের প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ যেন বাংলার মাটিতে স্থান না পায়।