প্রচ্ছদ আন্তর্জাতিক জন্মদিন উদযাপন করে সমালোচিত জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট মুগাবে

জন্মদিন উদযাপন করে সমালোচিত জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট মুগাবে

0
জিম্বাবুয়ের দুর্ভিক্ষপীড়িত মাসভিঙ্গো শহরে প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের জাঁকজমকপূর্ণ জন্মদিন পালন করে সমালোচনার মুখে পড়েছে জিম্বাবুয়ের ক্ষমতাসীন দল জানু-পিএফ। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির এই শীর্ষ নেতার ৯২তম জন্মদিন পালন করতে দলটি অন্ততপক্ষে আট লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে।
‘ক্ষুধার্ত জনগণের সামনে’ এ ধরণের অপচয়কে ‘কুৎসিত’ অভিহিত করে বিরোধী মুভমেন্ট ফর ডেমোক্র্যাটিক চেঞ্জ (এমডিসি) শাসকদলকে এ ঘটনার জন্য ‘লজ্জিত হওয়া’র আহ্বান জানিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জিম্বাবুয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক ও খাদ্য সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি বেশি হওয়ায় দেশটির নিজস্ব মুদ্রা ‘প্রায় অচল’ হয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ লেনদেনের ক্ষেত্রে দেশটি এখন বিদেশি মুদ্রা ব্যবহার করে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শহর মাসভিঙ্গোতে হওয়া জন্মদিন অনুষ্ঠান জিম্বাবুয়ের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। মুগাবে তার স্ত্রী গ্রেসকে নিয়ে গ্রেট জিম্বাবুয়ে মনুমেন্টের সামনে ৯২টি বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। অন্ততপক্ষে ১০ হাজার মানুষ প্রেসিডেন্টের জন্মদিন উদযাপনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
নিজের জন্মদিনে দেয়া ভাষণে মুগাবে পশ্চিমা দেশগুলোর ‘ঋণদান নীতির’ তীব্র সমালোচনা করেন বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদপত্র হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ওই ভাষণে মুগাবে বলেন, সমকামী বিয়েকে ‘বৈধ’ করে দেয়ার শর্তে পশ্চিমারা ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। কিন্তু পচা, নোংরা ওই সাহায্য আমি নেবো না।
২০০০ সাল থেকে শ্বেতাঙ্গ-মালিকানাধীন খামার বাজেয়াপ্ত ও পরে তা কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে পুনর্বন্টনের পর থেকেই পশ্চিমাদের সঙ্গে মুগাবের টানাপড়েন চলে আসছে। পশ্চিমারাও দেশটির সাম্প্রতিক সংকটের জন্য মুগাবের নীতির সমালোচনা করে আসছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির দেয়া তথ্যমতে, খরার কারণে জিম্বাবুয়ের খাদ্য উৎপাদন গেল বছরের অর্ধেকে নেমে এসেছে।
সরকার বলছে, দেশটির ৩০ লাখ মানুষ এই মুহূর্তে চরম খাদ্য সংকটে ভুগছে। সংকট কাটাতে দেশটির সরকার চলতি মাসের শুরুতে ১৬০ কোটি ডলার অর্থ সাহায্য চেয়েছে। বিরোধী দল এমডিসি মুগাবের জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানকে ‘অসুস্থ’ বলে অভিহিত করে বলেছে, অনুষ্ঠানে খরচ করা অর্থ দিয়ে ভুট্টা কিনতে পারতো সরকার, যা দিয়ে মাসভিঙ্গো ও অন্যান্য অঞ্চলের ‘আসন্ন দুর্ভিক্ষ’ এড়ানো সম্ভব হতো।
এমডিসি’র মুখপাত্র গুটু বলেন, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষকে দারিদ্র্যের মধ্যে রেখে এ ধরণের আয়োজনের জন্য শাসকদলের ‘লজ্জিত হওয়া উচিত’। এই ভয়াবহ পাগলামি কেবল দেশটির সরকারি কোষাগারের উপরই সজোরে আঘাত করেনি, একইসঙ্গে তা দুর্ভিক্ষপীড়িত অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে চরম পরিহাসেরও সৃষ্টি করেছে।” বলেন এমডিসির সাংসদ এডি ক্রস।
তবে শাসকদলের এক যুবনেতা বিরোধীদের এইসব অভিযোগ-অনুযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। পপুরাই তগারেপি নামের ওই যুবনেতা রয়টার্সকে বলেন, টাকাটা এখানে মুখ্য নয়। জিম্বাবুয়ের উন্নতির জন্য প্রেসিডেন্ট মুগাবে যা করেছেন, তাকে টাকা দিয়ে মূল্যায়ন করা যাবে না। এসব জিনিস টাকার চেয়েও বেশি। ১৯৮০ সালে ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে মুগাবে জিম্বাবুয়ের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে আসছেন।
বিবিসি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here