অনলাইন ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের নামে রোহিঙ্গাদের গ্রামে নির্বিচারে গুলি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে।
এ অবস্থায় প্রাণ বাঁচাতে দলে দলে রোহিঙ্গারা বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছেন। এরই মধ্যে এক লাখ ২৬ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
কিন্তু অভিযানের ১১ দিনের মাথায় প্রথমবারের মতো মুখ খুলে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সুচি দাবি করেছেন, রাখাইনের সব জনগণকে সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো উপায়ে রক্ষার কাজ শুরু হয়েছে।
তার দাবি, ভুল তথ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতি তৈরি করা হয়েছে, যা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সমস্যা তৈরি করেছে এবং এর মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদীদের স্বার্থ চরিতার্থ হচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে অং সান সুচির কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
তুরস্কের উপ-প্রধানমন্ত্রী টুইটারে একটি ছবি প্রচার করে তা নিহত রোহিঙ্গাদের বলে দাবি করেছিলেন। এ ছবির বরাত দিয়ে রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভুল তথ্য প্রচারের অভিযোগ করেন সুচি।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট ভোররাত থেকে রাখাইনে সীমান্তরক্ষী পুলিশের সঙ্গে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যদের সংঘাত শুরু হয়।
এতে শতাধিক ব্যক্তি নিহত হন। এর মধ্যে ১২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বাকিরা আনসার সদস্য ছিল।
এ ঘটনার পর মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী বিতাড়ন অভিযান শুরু করে। তারা রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোতে হানা দিয়ে সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করছে এবং ঘরবাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দিচ্ছে বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে।
অভিযানকালে গত ১১ দিনে অন্তত ৪০০ রোহিঙ্গা নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই সাধারণ নিরস্ত্র রোহিঙ্গা।
এদিকে অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত এক লাখ ২৬ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পৌঁছেছে।
এ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধনের শিকারের আশঙ্কার কথা জানিয়ে রাখাইনে সহিংসতা বন্ধ করতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস।
কিন্তু প্রথমবারের মতো মুখ খুলে রাখাইনে সহিংসতা চালানোর বিষয়টি চেপে গিয়ে রোহিঙ্গাদের নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচারের অভিযোগ করলেন সুচি।