থেমে গেল সুরেলা সেই কন্ঠস্বর৷ আর কোনোদিন মঞ্চ মাতাতে দেখা যাবে না তাঁকে৷ প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সারে মারা গেলেন প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী শ্যারন জোনস। দীর্ঘ রোগভোগের পর শুক্রবার নিই ইয়র্কের হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি৷ মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬০৷ শ্যারনের সুরেলা কন্ঠের ভক্ত গোটা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে৷ যদিও প্রথম জীবনে গানের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ ছিল না তাঁর৷ দীর্ঘদিন আমেরিকার একটি সংশোধনাগারে কর্মরত ছিলেন৷ তবে গান যার রক্তে তিনি কতদিন আর অন্যকিছুতে শান্তি খুঁজে পাবেন? চল্লিশে গানের জগতে আত্মপ্রকাশ শ্যারনের৷ তাঁর ব্যান্ড ড্যাপ-কিং অল্পদিনেই সঙ্গীতপ্রেমীদের নজর কাড়ে৷ ২০১৪ সালে শ্যারন জোনস ‘গিভ দ্য পিপল হোয়াট দে ওয়ান্ট ’-এর জন্য গ্র্যামি মনোনয়ন পান৷ ১৯৫৬ সালে সাউথ ক্যারোলিনার নর্থ অগাস্টায় তাঁর জন্ম৷ পরে অবশ্য ব্রুকলিন চলে আসেন৷ ১৯৯৬ -এ ‘সুইচব্লেড ’ তাঁকে প্রথম পরিচিতি দেয়৷ তখনও ড্যাপ-কিং ব্যান্ড তৈরি করেননি শ্যারন৷ শুরুতে শ্যারনের ভক্তরা তাঁকে ‘কুইন অফ ফাঙ্ক’ বলে ডাকতেন৷ আর ব্যান্ড তৈরির পর তাঁর প্রথম অ্যালবাম ‘ড্যাপ -ডিপিন ’৷
যা খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল৷ ড্যাপ -কিং -এর জনপ্রিয় অ্যলবামগুলির মধ্যে অন্যতম ‘ন্যাচারালি’, ‘হান্ড্রেড ডেজ , হান্ড্রেড নাইটস’, ‘আই লার্নড দ্য হার্ড ওয়ে’ ইত্যাদি৷ ২০০৭ সালে ‘দ্য গ্রেট ডিবেটারস ’ ছবিতে ‘দ্যটস হোয়াট মাই বেবি লাইকস’ গানে লিপ দিতে দেখা গিয়েছিল শ্যারনকে৷ ২০১৫ সালে শ্যারনকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্রও তৈরি হয়৷ ২০১৩ সালে ক্যান্সার ধরা পড়ে শ্যারনের৷ অন্য কেউ হলে হয়তো হাল ছেড়ে দিতেন৷ কিন্তু শ্যারন তেমন ছিলেন না৷ ক্যান্সার তাঁর শরীরে থাবা বসিয়েছিল, মনে নয়৷ তাই ক্যান্সারকে শরীরে নিয়েই একের পর এক লাইভ পারফরম্যান্স করে গিয়েছেন তিনি৷ আত্মীয়েরা জানান, কেমো নিতে যখন হাসপাতালে যেতেন তখনও সদা হাস্যময় থাকতেন শ্যারন৷ এক চিকিসকের কথায় ‘শ্যারন যখন হাসপাতালে আসতেন, হাসপাতালটা যেন প্রাণ খুঁজে পেত।’ আর শ্যারন বলতেন, ক্যান্সার হয়েছে বলে বিছানায় শুয়ে থাকার বান্দা আমি নই৷ যতদিন পারব গান গেয়ে যাব৷ লোককে আনন্দ দিয়ে যাব৷ সেটাই আমার কাজ।’শয্যাশাযী হয়ে পড়ার আগে পর্যন্ত গানই ছিল শ্যারনের সবচেয়ে বড় সঙ্গী। চিকিত্সকরা বলছেন, ‘গানই শ্যারনকে সুস্থ রাখত৷ শ্রোতাদের গান শুনিয়ে চনমনে হয়ে উঠতেন তিনি।