দাম্পত্য সম্পর্ক বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন মনোবিদ্যা প্রফেসর জন গটম্যান। তিনি ৯৩.৬ শতাংশ নির্ভুলতায় যে কোনো দম্পতির বিয়ে টিকে থাকবে কি না, তা ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারেন। সম্প্রতি তিনি তার বই ‘দ্য সেভেন প্রিন্সিপালস ফর মেকিং ম্যারেজ ওয়ার্ক’-এ বিয়ের সম্পর্ক বিষয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। এ লেখায় রয়েছে তার মতের ভিত্তিতে বিয়ের সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার জন্য দায়ী কয়েকটি কারণ। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
১. সমালোচনা
সমালোচনা অত্যন্ত জটিল একটি বিষয়। কখনো কখনো তা সঙ্গীর জন্য চরম বিরক্তিকর হয়ে দাঁড়ায় এবং স্বাভাবিক সম্পর্কও বিচ্ছেদের দিকে নিয়ে যায়। তাই সমালোচনা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা। বিশেষ করে যে সমালোচনার সঙ্গে গঠনমূলক কোনো ভূমিকা থাকে না, তা প্রায়ই বিবাহিত জীবনকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে বলে মত তাদের।
২. আত্মরক্ষামূলক মনোভাব
আত্মরক্ষামূলক পরিবেশ বিবাহিত জীবনের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। এ বিষয়টি আপনার সঙ্গীকে বার্তা দেয় যে, তাকে আপনি কেয়ার করেন না কিংবা তার অনুভূতির আপনি মূল্য দেন না। যে কোনো আলোচনা ও সমালোচনায় এ বিষয়টি আপনাকে দুর্বল করে দেবে। এতে সম্পর্কও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। কোনো সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে এতে তা জটিলতার দিকে চলে যায়।
৩. পাথরের দেয়াল তৈরি
দুজনের সম্পর্কের মাঝে পাথরের দেয়াল তৈরি হতে পারে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার একটি বড় কারণ। এক্ষেত্রে কথাবার্তা কিংবা শারীরিক উপস্থিতি যাই থাক না কেন, দুজনের মনের মাঝে গড়ে ওঠে পাথরের দেয়াল। আর এতে উভয়ের মাঝে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়, যা তাদের সম্পর্ক বিচ্ছেদের দিকে নিয়ে যায়। এ পাথরের দেয়াল একদিনে গড়ে ওঠে না। এছাড়া দেয়াল তৈরি হয়ে গেলে তা ভেঙে ফেলাও দুরূহ। তাই দম্পতিদের উচিত এ দেয়াল যেন গড়ে উঠতে না পারে, সেদিকে মনোযোগী হওয়া।
৪. অবজ্ঞা
একজন মানুষ অন্যজনকে অবজ্ঞা বা অবমাননা করলে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তা স্বাভাবিকভাবেই প্রভাব পড়ে। এটি স্বাভাবিক সম্পর্ক নষ্ট করে এবং এক পর্যায়ে সম্পর্ক সম্পূর্ণ বিচ্ছেদের দিকেও নিয়ে যায়। অবজ্ঞা হতে পারে স্বাভাবিক কথাবার্তা কিংবা সাধারণ রসিকতা বা মজা করার মাধ্যমেই। তাই দম্পতিদের এসব বিষয় সতর্কতার সঙ্গে করা উচিত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কোনো কারণে সঙ্গী অবজ্ঞার শিকার হচ্ছে কি না, তা লক্ষ্য রাখা।