প্রজাপতি ও ইচ্ছে
প্রজাপতির পাখায়ে হাজার রঙ,
রংধনুর মত একেকটি রঙ বুঝি একেকটি অনুভূতির প্রকাশ।
না পাওয়ার আনন্দ, না পাওয়ার কষ্ট, স্বপ্ন; কান্না অথবা উচ্ছাস
আর কত রঙ যে ধরে রেখেছে এই ক্ষুদ্র কীট তাঁর আপন বুকের ভেতর।
আর এই আমি, কথিত সমাজের সাধীনা এক নারী,
আমার রয়েছে ছোট্ট একটা ঘুড্ডি, যার নাম দিয়েছি ’ইচ্ছে’,
আমার ইচ্ছের আছে মাত্র দুটি রঙ,
প্রজাপতির হাজারো রঙে সাজে না ওঁ।
ওঁর একটা পাশ শুভ্র সাদা আরেকটা কালো,
এ দুটি রঙ ছুঁয়ে বেঁচে আছে আমার ইচ্ছে।
আমার ঘুড্ডিটা যে বড়ই সুবোধ,
সমস্ত পৃথিবী যেখানে মুখর, আমার ইচ্ছে সেখানে নিশ্চুপ প্রকৃতিরই মত শান্ত,
প্রজাপতির মত হাজারো রঙের কিবা প্রয়োজন,
সাদা আর কালোতেই বাঁধা যখন ওঁর পৃথিবী।
অনেক উপরে উড়তে চায় না ঘুড্ডিটা।
পাছে আকাশের নীল কে না ভালবেসে ফেলে,
মেঘের কাছে ঘেঁষে করে না উল্লাস
পাছে মেঘের সাথে মিতালী না হয়ে যায় আনমনে,
খুব যতœ করে নিজেকে লুকিয়ে রাখে ওঁ,
ভালবেসে নিজেকে সীমানার ভেতর বন্দী রাখতে
কেউ যাতে স্পর্শ না করে তাঁর সাদাকালো শরীরটা।
স্বপ্নের সাথে বাস
বিবর্ণ শহরে সবকিছু কেমন বর্ণহীন
শুধু বেঁচে থাকে ছোট বড় স্বপ্নরা।
মানুষ যখন বাস্তবতার দাবী পূরণে ক্লান্ত,
স্বপ্নগুলো বারবার তাড়া দেয় তাকে।
স্বপ্নরা যেন ভরাট কন্টে কথা বলে মানুষের সাথে
ওরা গুরুগম্ভীর সুরে বলে, ’চল, চলতে তোমাকে হবেই;
আবারও শুরু হয় মানুষের যাত্রা, আবারও স্বপ্ন তৈরির পালা,
স্বপ্ন তৈরির কারিগর যে সে নিজেই, তাই বিরতি মেলে না তাঁর এক মুহূর্তও,
চলতে থাকে, কেবলই চলতে থাকে,
এই চলার শেষ কোথায় জানা নেই তাঁর।
অনন্ত পথ, কখনো ভালবাসার জোছনা এসে আলতো ছুঁয়ে যায় তাঁর মুখ
কখনো আবার ঘৃনার কন্টক রক্তাক্ত করে তাঁর হৃদয়,
তবু স্বপ্নের কারিগরকে স্বপ্নের সাথেই বাঁচতে হয়,
বিরতি মেলে না তাঁর এক জীবনে।
মানুষ ধর্ম
সমস্ত বাস্তবতাকে সাক্ষী রেখে মানুষ চিরটি কাল চেয়েছে
তাঁর অসমাপ্ত চাওয়াকে সমাপ্তির কাছে নিয়ে যেতে,
তবু পারেনি আজ অবধি কেও।
মানুষ ভেবেছে চিরটিকাল নিজেকে নিঃসঙ্গ,
যেটুকু অর্জন, তাঁর একারই সমস্ত কৃতিত্ব,
অদৌ পেরেছে কি একা চলতে?
ছায়া নামের সঙ্গকে অস্বীকার করতে চেয়েছে মানুষ লক্ষ সময় বকে জীবনে,
তবু আজ অবধি পারেনি মানুষ।
এখানেই বোধ হয় মানুষ ক’লের সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা,
ওহে মানুষ, ছায়া যদি এক মুহুর্তে অস্বীকার করে সঙ্গ তোমার,
এবু সীমাবদ্ধতায় তোমায় মুক্তি দেবে না জেনো,
তবু পারবে না একা থাকতে,
আজ অবধি পারেনি কেও।