ভালোবাসার এক চরম নিদর্শন দেখাল যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেন্ট উইন্সটিড ও ডোলারেস উইন্সটিড দম্পতি। ৬৪ বছর একসঙ্গে সুখে সংসার করার পর একে অপরের হাতে হাত রেখে মারা গেছেন।
৯ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসির একটি হাসপাতালে এ দম্পতি মারা যায়। খবর দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের।
চলতি মাসেই ৮৮ বছর বয়সী স্বামী ট্রেন্টকে কিডনি সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর কয়েক দিন আগে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে যায় তার। বাড়তে থাকে রক্তচাপ। স্বামীর এমন মুমূর্ষু অবস্থায় হাতে হাত রেখে হাসপাতালের বেডে নীরব বসে থাকতেন ডোলারেস।
তিনি প্রায়ই বলতেন, আমি জানি না তাকে ছাড়া কীভাবে বেঁচে থাকব। কোরিয়া যুদ্ধের সময় থেকে তাদের পরিচয়। সংসার করেছেন ৬৪ বছর। টেনেসি রাজ্যের নাসভিলের এ দম্পতির দুই ছেলেমেয়ে, তিন নাতি-নাতনি এবং ৮ জন প্রোপৌত্র।
১৯৫০ সালে ট্রেন্ট কোরিয়া যুদ্ধে অংশ নেয়ার আগে তারা ডেটিং শুরু করেন। বিদেশ থেকে বহু চিঠি লিখেছেন ট্রেন্ট। তাতেই চূড়ান্ত পটে যান ডোলারেস। শুরু করেন সংসার জীবন। দুই মেরুর দুই বাসিন্দা ছিলেন তারা। ডোলারেস রান্না করতে ভালোবাসতেন। কাজ করতেন একটি প্রকাশনায়।
অন্যদিকে ট্রেন্ট গলফ খেলা এবং মৎস্য শিকার করতে ভালোবাসতেন। গ্লাস তৈরির কারখানায় কাজ করতেন তিনি। অবসর গ্রহণের পর একসঙ্গে সময় কাটাত এ দম্পতি। প্রতি রাতে ১০টার খবর দেখতেন এবং রোববার একই সঙ্গে গির্জায় যেতেন। ট্রেন্ট ডোলারেসকে ‘মামা’ বা তার মাঝের নাম ‘আইলিন’ বলে ডাকতেন। মাঝে মাঝে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে নাচতেন।
মার্কিন এ দম্পতির কন্যা শারেল উইন্সটেড বলেন, খুবই সাধারণ ছিল তাদের সম্পর্ক, তবে বেশ মধুময়। কয়েক দিন ধরে খাওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ৬ ডিসেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ট্রেন্টকে। ধরা পড়ে কিডনির সমস্যা। ডায়ালাইসিসের জন্য বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয় তাকে। ৭ ডিসেম্বর রাতে মাথাব্যথা করছে বলে জানান ডোলারেস। রাত ১০টায় হঠাৎ করে চেয়ার থেকে পড়ে যান তিনি।
ডাক্তার পরীক্ষা করে জানান, ব্রেইন স্ট্রোক করেছেন। ভর্তি করা হয় একই হাসপাতালের অন্য রুমে। তবে মেয়ের অনুরোধে ৮ ডিসেম্বর হাসপাতালের প্রথা ভেঙে এ দম্পতির বেড কাছাকাছি আনা হয়। এক দিন পর ৯ ডিসেম্বর রাত ৯টা ১০ মিনিটে মারা যান ডোলারেস। কপালে একটি শেষ চুম্বন আঁকেন স্বামী ট্রেন্ট। এর কয়েক মিনিট পরই তিনিও মারা যান।