প্রচ্ছদ সাহিত্য নজরুল ইসলাম বাসনের দু‘টি গ্রন্থ

নজরুল ইসলাম বাসনের দু‘টি গ্রন্থ

0
ড: রেণু লুৎফা: অলৌকিক রির্পোট ও শেকড়ের স্মৃতি নামের দু‘টি গ্রন্থ । বেশ কিছুদিন পূর্বে পেয়েছি। অনেকবার পড়া শুরু করেছি কিন্তু এগুতে পারিনি। ধৈর্য্যে কুলায়নি। তবে যতোটুকু পড়েছি মনে হয়েছে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়া অমূল্য সম্পদ। এবারের গ্রীষ্মের ছুটির শুরুতেই নর্থ ইংল্যান্ডে বেশ কয়েকটি শিক্ষা বিষয়ক কর্মশালায় উপস্থিত থাকার সুযোগ আসতেই তা লুফে নিলাম। সাথে করে নিয়ে গেলাম গ্রন্থ দু‘টি। ইচ্ছে করেই অন্য কোন গ্রন্থ সাথে নেই নি যাতে করে ধৈর্যচ্যুতি হলেও যেন পালাবার কোন পথ না থাকে।

বাসনের লেখার সাথে আমার দীর্ঘ পরিচয়। যা বলতে চায় তা অভেদ্য কিন্তু প্রকাশের ভাব এলামেলো। অনেকবার এ নিয়ে তাকে বলেছি সম্ভবত সে ভালো পায়নি। ভাল পাবার কথাও নয়। নিজের সমালোচনা কে ভাল পায়!

পড়া শুরু করে দেখি ওমা, এ যেন আমাদের বৃটেন বসতির সোনার খনি! পরতে পরতে ইতিহাসের পিছনের ইতিহাস। চোখের সামনে ঘটে যাওয়া (অথচ ভুলে যাওয়া ) বিষয়ের বিবরণ। আমাদের বৃটেন বসতির ইতিহাসের স্তূপ আর ¯তূপ । আমরা বাঁচার তাগিয়ে জীবন যুদ্ধের ময়দানে শুধু এগিয়ে চলি। ধরে রাখতে পারি না কোন স্মৃতি। হয়তো শতবর্ষ পরে কেউ পত্রিকার পাতা ঘেটে ইতিহাস লিখবেন কিন্তু ইতিহাসের পিছনের ইতিহাস কি কখনো কারা পক্ষে লেখা সম্ভব হবে?

কৈশোরে পেরুলেই আমরা ভুলে যাই শৈশবের সব স্মৃতি। বাসনের গ্রন্থ দ¦য় বয়ে আনলো আমাদের বসত গড়ার বিভিন্ন বাঁকের ইতিহাস। মনের পর্দায় একের পর একে ভেসে উঠলো সে সব নানা চাড়ই উৎরাইয়ের স্মৃতি। জলছবির মতো ফুটে উঠলো সেই সব গৌরবের স্মৃতি। কী বিপুল ঘটানকীর্ণ আমাদের সেই ইতিহাস। জীবন স্মৃতির এক উজ্জল এলবাম। আশেপাশে ছড়িয়ে রয়েছে অজস্র মুখ। কী মহামূল্যবান এই স্মৃতি। দীর্ঘ তিন যুগেরও বেশী সময়কালের সিলেট ও বৃটেনের ধারাবাহিক সামাজিক ও রাজনৈতি চালচিত্র। বৃটেনের বাংলাদেশী সমাজের উত্থান পত্তন ও বিবর্তনের ইতিহাস। দেশীয় রাজনৈতিক প্রভাবের বিরূপ ফল কি ভাবে বৃটেন প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিভক্ত করে রেখেছে তার ভ’রি ভ’রি উদহারন সহ চলমান সময়ের একটি চমৎকার বিশ্লেষন।

কিন্তু গ্রন্থদ্বয় পাঠকদের মোহগ্রন্থ করে রাখতে পারবে না। আমি চাই বাসন এ গ্রন্থদ্বয়কে আবারও সম্পাদনা করে প্রকাশ করুন। এ গ্রন্থ দ্বয়ে রয়েছে আমাদের সময়ের ধারা চিত্র। এমন আন্তরিক মূল্যবান অন্তরঙ্গ বিষয়গুলোকে পাঠক সম্মূখে সুখপাঠ্য করে গুছিয়ে নিয়ে আসা লেখকের দায়িত্ব বলে আমি মনে করি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here