বিবিসি:যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মঞ্চে যখন বিজয়ী বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, তখন জার্মানির বার্লিনে মোমবাতি জ্বালিয়ে ১৯৩৮ সালে ইহুদি ও তাদের ব্যবসা আক্রান্ত হওয়ার দিনটি স্মরণ করে ‘ক্রিস্ট্রাল রাত’ পালিত হচ্ছিল। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো ট্রাম্প জয়ের বন্দনা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও সেদিন বার্লিন ওয়াল পতনের ২৭তম বার্ষিকী পালিত হচ্ছিল জার্মানিতে।
এই উভয় ঘটনায় দেশ দুটির অতীতের প্রতিনিধিত্ব অন্তত আংশিকভাবে ব্যাখ্যা করে। এক জরিপে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে চেয়েছিলেন মাত্র চার শতাংশ জার্মান। দেশটির জাতীয় টেলিভিশন এআরডি’র এক জরিপে দেখা গিয়েছিল, অধিকাংশ জার্মান ট্রাম্পকে বিশ্বাস করে না। তারা আরো বিশ্বাস করে, ট্রাম্প নির্বাচিত হলে ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্কের অবনতি ঘটবে। কয়েক বছরের জন্য এটা এমন এক সম্পর্ক হবে যা বিশেষ ধরনের ‘পতন’ হওয়াকে ইঙ্গিত করে।
ট্রাম্পের এ জয় বিশ্বের অন্য দেশগুলোর মতো জার্মানিতেও শোক ও আতঙ্ক বিরাজ করছিল। ট্রাম্পকে সমালোচনা করায় প্রকাশ্যে অভিনন্দন জানাতে পারেননি জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক-ওয়ালটার স্টেইনমেয়ার। ট্রাম্পের জয়ের খবরে জার্মানির স্থানীয় এক পত্রিকার শিরোনাম ছিল ‘ও মাই গড’। আরেকটি পত্রিকার শিরোনাম ছিল ‘আমরা শোক পালন করছি’। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল শুনে জার্মান এক মন্ত্রী বলেন, একটি দুঃস্বপ্ন দেখার পর ঘুম ভেঙে গেছে।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল এবং বিদায়ী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মধ্যে শক্তিশালী ও উষ্ণ অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্কের কথা কারো অজানা নয়। তাদের এ সম্পর্কের প্রভাব গোটা ইউরোপ জুড়েই ছিল। এ কারণেও যুক্তরাষ্ট্রের গুপ্তচরদের মার্কেলের মোবাইলে আড়ি পাতার অভিযোগ রয়েছে। যদিও ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র পাঠানোর পরিকল্পনা শক্তভাবে মার্কেল নিয়ন্ত্রণ করেছেন। মার্কেল-পুতিনের কথোপকথনেও জার্মানির বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে।
এরই মধ্যে মার্কেল সদ্য জয়ী ট্রাম্পকে টেলিফোনে অভিনন্দন জানিয়ে তার সহযোগিতা কামনা করেছেন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মার্কেল তার দেশের সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে নিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন বলে অনেকে মনে করছেন। তবে সবার আশা, তাদের ধারণাকে ভুল প্রমাণ করবেন ট্রাম্প।