মিঠু হালদার : কবরী-ফারুক অভিনীত সত্তর দশকের সাড়া জাগানো সাদাকালো চলচ্চিত্র ‘সুজন সখি’ ছবির ৩৫ মি.মি. একটি প্রিন্ট উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ। ১১ জুন দুপুরে ফিল্ম আর্কাইভ সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
ফিল্ম আর্কাইভের চলচ্চিত্র সংগ্রাহক ফখরুল আলম ১১ জুন মগবাজার এলাকার একটি বাড়ি থেকে সুজন সখি ছবির এ প্রিন্টটি উদ্ধার করেন। ১৯৯১ সালের পর থেকে প্রায় তিন দশক পর্যন্ত এ ছবিটির কোনো প্রিন্ট কিংবা নেগেটিভের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ ছবিটির কোনো সেলুলয়েড প্রিন্টের কপি না থাকায় দীর্ঘদিন থেকে এটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছিলো। প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় পর ফখরুল আলম এটির সন্ধান পান খান আতাউর রহমানের অফিস স্টাফ দেলোয়ারের কাছে এ ছবির একটি প্রিন্ট রয়েছে।
আর দেলোয়ারের কাছ থেকে আজ ১১ জুন ৩৫ মি. মি. ১৩ রীলের সাদাকালো সুজন সখি ছায়াছবির একমাত্র প্রিন্ট উদ্ধার করা হয়।
১৯৭৫ সালের ১০ অক্টোবর মুক্তিপ্রাপ্ত গ্রামীণ গল্পের সাড়া জাগানো এ ছবিটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। জনতা প্রোডাকশনের ব্যানারে এ ছবির পরিচালক হলেন প্রমোদকার গোষ্ঠি। ১৯৯০-৯১ সালের দিকে সাদাকালো ছবি হলে কম চলায় খান আতাউর রহমানের ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজার সৌমেন বাবু এ ছবিটি বিক্রি করে দেন মিয়া আলাউদ্দিনের কাছে।
এছাড়া মিয়া আলাউদ্দিন থেকে সুজন সখি ছবির একটি মাত্র কপি বেটাকম ক্যাসেটে ক্রয় করে রাখেন মধুমিতা মুভিজের মালিক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ।
সুজন সখি চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসাবে খান আতা, প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসাবে আবদুল আলিম ও সাবিনা ইয়াসমিন প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। ১৯৭৫ সালে নির্মিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন কবরী, ফারুক আনোয়ার হোসেন, সুলতানা জামান, রওশন জামিল, মিনু রহমান, খান আতা, টেলিসামাদ, ইনাম আহমেদ ও আরো অনেকে।
১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ ছবির গল্প গড়ে উঠেছে গ্রামীণ পটভূমিতে। কাহিনি গতানুগতিক হলেও পরিচালনা, অভিনয় এবং বিশেষ করে সংগীত এ ছবির প্রধান সম্পদ। গ্রামের তরুণের ভূমিকায় ফারুক এবং তরুণীর ভূমিকায় কবরী ছিলেন অনবদ্য। পারিবারিক সংঘাতের ফলে শৈশবে বিচ্ছিন্ন দুই খেলার সাথীর (চাচাতো ভাইবোন) পূর্ণ বয়সে দেখা হওয়া ও প্রেমকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় সিনেমার গল্প। ‘সব সখীরে পার করিতে নেব আনা আনা’, ‘গুনগুনাগুন গান গাহিয়া নীল ভ্রমরা যায়’-এ ছবির দুটি জনপ্রিয় গান। ১৯৯৪ সালে ছবিটির রিমেইক হয়। এতে অভিনয় করেন সালমান শাহ ও শাবনূর।