সৈয়দ হিলাল সাইফ: ব্রিটেনের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী গৌরি চৌধুরী’র সঙ্গীত স্কুল সুরালয়’র দুবছরপূর্তী উপলক্ষে শনিবার রমফোর্ডের মেফেয়ার ভ্যানু ছিলো গুরু-শিষ্যের সুরের মুর্ছনায় মোহাবিষ্ট। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত গৌরী চৌধুরী ও তাঁর ছাত্র ছাত্রীদের মিলিত সুরের মুর্ছনায় বিমোহিত ছিলেন হলভর্তি দর্শক-স্রোতা। গৌরী’ যাদের গান শেখান, তাদের সকলেরই প্রথম ভাষা ইংরেজি। গৌরীর জন্য বিষয়টি যেমন বেশ কঠিন তেমনি বড় সম্মানেরও।
ব্রিটেনের সঙ্গীত জগতে গৌরী চৌধুরী শুধু একটি নামই নয়, একটি প্রতিষ্ঠান। নিজে একজন জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী, গান করছেন ছোটবেলা থেকে।উস্তাদ একুশে পদক প্রাপ্ত প্রয়াত বিখ্যাত রাম কানাই দাস। গান করেন দেশে বিদেশে বাংলা টিভি ও রেডিওতে। তাঁর সুরেলা কন্ঠ শ্রবনে বিমুগ্ধ হয়েছেন সংগীত পিপাসু শ্রোতারা।রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল সংগীত, আধুনিক,পল্লীগীতি, ধ্রুপদি,ফোক সংগীতের সকল শাখায় রয়েছে তাঁর সমান দক্ষতা। ১১ বছর বয়সে তিনি জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার অর্জন করেন।১২ বছরে হন রেডিও বাংলাদেশের তালিকাভুক্ত শিল্পী।১৬ বছর বয়সে সংগীতের শিক্ষক হিসেবে নিজের আত্মপ্রকাশ ঘটান গৌরী চৌধুরী। এই নামটি ধীরে ধীরে আজ একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০১৫ সালে লন্ডনের গ্যান্টসহিলে তাঁর প্রতিষ্ঠিত গানের স্কুল’ সুরালয়’ সাফল্যের সঙ্গে দুই বছর পার করেছে।অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ছাত্রছাত্রীদের গান শিখিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বর্তমানে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ৫৫’র অধিক।গানের ভূবনে সর্বত্র বিচরণকারী এই বহুমাত্রিক গুণী শিল্পী বৃটেনের শেতাঙ্গদের ও বাংলা গান শিখিয়েছেন এবং বাংলা ভাষার প্রতি তাঁদের আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছেন বহুগুন। রয়েল ফ্যাস্টিভ্যাল হলে একবার ১২০০ ছাত্র ছাত্রী নিয়ে তিনি সংগীত পরিবেশন করেন।সেখানে বাংলা গানও ছিলো।
লন্ডনের সর্ব শ্রেনীর মানুষের উপস্থিতিতে হাজার খানেক শ্রোতার সমাগম ঘটে সুরালয়’র শনিবারের অনুষ্ঠানে।
‘সুরালয়’ দর্শক শ্রোতাদের নিয়ে গিয়েছিলো সুরের যাদুকরী মূর্ছনায়।উপস্থিতিদের হর্ষধ্বনি ও করতালিতে তা বারবার ফুটে ওঠে। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা সাবলিল ভাবে সংগীতের প্রতিটি শাখার গান গেয়ে যে দক্ষতার পরিচয় রাখে, তাতে সত্যিকার অর্থে গৌরী চৌধুরীর কষ্টের অর্জনই প্রতিফলিত হয়েছে।এটিএন বাংলার উপস্থাপিকা উর্মি মাজহারের প্রাণবন্ত উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে নিয়ে আসে ভিন্ন মাত্রা। গৌরীকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন তাঁর স্বামী, বন্ধুবান্ধব ও গুরুজনেরা।
তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমূখ ছিলেন বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা মাহমুদ হাসান এমবিই, উদীচী সভাপতি গোলাম মোস্তফা, জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী লুসি রহমান, কাওসার হাবিব ও সয়ফুল আলমসহ অনেকে। সকলেই তাঁর আগামীর উজ্জল ভবিষ্যত ও উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন। ‘সুরালয়’ যেনো সুরে, সুরে আরো অনেক দূরে দ্যুতি ছড়ায় এমন প্রত্যাশাই ছিলো সকলের কন্ঠে।