বিনোদন ডেক্স ঢাকা: ভারতবর্ষ থেকে আসার পরই আমি গান গাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কারণ ওখানে আমি নর্থ ইন্ডিয়ান ক্লাসিক্যাল মিউজিকের সঙ্গে একটা দীর্ঘসময় ব্যয় করি। এ ধারার অনেক গুণী শিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য হয় আমার।
এ ধরনের মিউজিকের সঙ্গে আমার একটা আত্মিক সম্পর্কও গড়ে ওঠে। কিন্তু আমার ভেতরে গাছ-পালার মতো বেড়ে উঠেছে এবং খুব শক্তভাবে শেকড় গেড়ে আছে বাংলা ফোক গান। নিজে গান গাওয়ার কথা যখন ভাবছিলাম, তখন একদিকে আমাকে ফোক গান খুব টানছিল, অন্যদিকে ক্লাসিকের প্রতি সদ্য গড়ে ওঠা ভালোবাসাও আমাকে খুব হাতছানি দিচ্ছিল।
দেশে ফিরে চিন্তা করি, ফোক মিউজিকের সঙ্গে ক্লাসিক মিউজিক পান্স করলে কেমন হয়। এ চিন্তা থেকে আমি কিছু নিরীক্ষাধর্মী গান করি।
হুমায়ূন আহমেদের ৪৫তম জন্মদিনে তার বাসায় সবার অনুরোধে কয়েকটি গান শোনাই। উপস্থিত সবাই বিশেষ করে অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর, ভারত বিচিত্রার বেলাল ভাই, বিটিভির মোস্তাফিজুর রহমান উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন এবং এ ধরনের গানের জন্য ভীষণ উৎসাহিত করেন।
তারপর হুমায়ূন আহমেদ তার শ্রাবণ মেঘের দিন ছবিতে আমাকে দিয়ে দুটি গান করান। ‘আমার মনে যত দুঃখ সয়’ এবং ‘শুয়া চান পাখি’ গান দুটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।
তারপর শহীদুল্লাহ ফরায়েজী আর আমি মিলে এ ধারার বহু গান করেছি। শ্রোতারা নতুন স্বাদ পেল। গানের কথা ভালো না হলে কোনো গানই মানুষকে টাচ করতে পারে না। কথা হচ্ছে একটা গানের মূল প্রাণ। আমি যেসব গান করি সেগুলোর কথায় কোনো না কোনো মেসেজ থাকে, ফিলোসফিকাল এলিমেন্ট থাকে। কিছু জিনিস আছে জানা যাবে না। কিছু জিনিস আছে পাঁচমিশালি রান্নার মতো।
এখান থেকে যদি প্রতিটি জিনিসকে আলাদা করে রান্না করা হয়, তাহলে যেমন হবে আর কি। অর্থাৎ আমি বলতে চাচ্ছি, ফোকের মধ্যে সব আছে, আমাদের কাজ হচ্ছে সঠিক নির্বাচন।