আনিসুর সুমন: আফরোজা নাজনীন সুমি, জনপ্রিয় রন্ধনশিল্পী। এমবিএতে পড়াশুনা শেষ করলেও ভালবাসার টানে রান্না নামের ঘরকুনো কাজকে নিয়ে যাচ্ছেন ঘরের বাইরে, শিল্পের আঙ্গিনায়। সময় কাটে ভাল লাগার ফটোগ্রাফিতে। ইত্তেফাক অনলাইনের সঙ্গে একান্ত আলাপে জানালেন ভাল লাগা, ভালবাসা আর রন্ধনশিল্পের খুঁটিনাটি নিয়ে।
কেমন আছেন ?
জ্বি, ভালো আছি। তবে কয়েকদিনের কাজের চাপে হুট করে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। ইনশাআল্লাহ দ্রুত আবারো কাজে ফিরতে পারবো।
রন্ধনশিল্পী হয়ে ওঠার গল্প শুনতে চায় ?
বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে পড়াশুনা করলেও আমার আগ্রহের জায়গা রন্ধনশিল্প। ছোটবেলা থেকে রান্নার প্রতি ভালবাসা গড়ে উঠেছে, ভালবাসা আজ পেশা থেকে শিল্পীর পর্যায়ে নিতে গেছে। ফুড এন্ড বেভারেজ নিয়ে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন থেকে ন্যাশনাল সার্টিফিকেট কোর্স এবং ফুড হাইজিন এন্ড সেইফটির উপর পড়াশোনা করেছি। মোনিন স্টুডিও ঢাকা থেকে বারিস্তা ট্রেনিংও নিয়েছি। মূলত ঢাকার রেডিসন ব্লু হোটেলে এখন আমি কর্মরত আছি। মিডিয়াতে কাজ করছি দুই বছর হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশি ফটোগ্রাফি সোসাইটির আজীবন সদস্য এবং উইমেন এনটারপ্রেইনার অ্যাসোসিয়েশন সদস্য হিসেবেও দায়িত্বে আছি।
![](http://www.ittefaq.com.bd/assets/images/news_images//2017/06/07/for_details/1496831106_0.jpg)
বর্তমান ব্যস্ততা কী নিয়ে ?
বছর দেড়েক আগে যমুনা টিভির লাইভ কিচেন দিয়ে আমার ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে যাত্রা। এখন বেশ কিছু চ্যানেল এ নিয়মিত রান্নার অনুষ্ঠান করছি। যমুনা টিভি ছাড়াও জিটিভি, চ্যানেল নাইন ও এটিএন বাংলাতে আমি রান্নার অনুষ্ঠান করি। এবারের রোজায় যমুনা টিভিতে ৩৫টা শোতে থাকছি, অনুষ্ঠানটি সারাদিনে পাঁচবার দেখায়। এছাড়া এটিএন বাংলায় ফার্মফ্রেশ মজাদার ইফতার। চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে রোজা উপলক্ষে আরো একটি অনুষ্ঠান করছি।
অন্যান্য কী কী কাজ করেছেন ?
টিভিতে অংশগ্রহণ ছাড়াও আমি নিয়মিত বিভিন্ন জাতীয় পত্র-পত্রিকায় রেসিপি দিচ্ছি। আনন্দ আলো, সাপ্তাহিক, রোদসি, স্পুন, স্বাদকাহন, এটিএন লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন, দ্য পেজেস, নিউ এজ, লুক মিসহ অন্যান্য পত্রিকায় রেসিপি দিয়ে থাকি। কলকাতার ফুড ম্যাগাজিন হ্যাংলা হেশেলেও আমি নিয়মিত রেসিপি দিয়ে থাকি।
![](http://www.ittefaq.com.bd/assets/images/news_images//2017/06/07/for_details/1496831106_1.jpg)
কাজের স্বীকৃতি ?
সম্প্রতি ১০ম স্টার অ্যাওয়ার্ড-২০১৭ এর জন্য মনোনীত হয়েছি। শিল্পকলা একাডেমীতে সেরা রন্ধনশিল্পী চিত্রজগত অ্যাওয়ার্ড-২০১৬ তে টেলিভিশন বিভাগের রন্ধন শিল্পী হিসাবে সম্মাননা পেয়েছি। প্রেসক্লাবে নাট্যসভা আয়োজিত নব প্রজন্মের রন্ধন শিল্পীদের মাঝে ঢাকা বিভাগের সেরা রন্ধনশিল্পীর পুরষ্কার ও রন্ধনশিল্পী হিসাবে বিশেষ সম্মাননা স্বারক পেয়েছি।
রন্ধনশিল্পী হিসেবে আইডল কে ?
আমার মা খুব ভাল রান্না করেন। সহজ এবং দেখতে সুন্দর এমন খাবার পরিবেশন করে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ পায়। বর্তমান প্রজন্ম আমার রান্না পছন্দ করে, সেভাবেই রান্নার চেষ্টা করি। নির্দিষ্ট কাউকে আমি আইডল হিসেবে মানি না। তবে যারা ভাল শেপ আছেন, তাদের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করি।
আপনার রান্নার বিশেষত্বগুলো কী ?
ঝটপট করা যায়, পরিবেশন এবং খেতে ভাল এমন রান্না করি সব সময়। খাবারকে ফিউশন করে দেশিয় আঙ্গিকে উপস্থাপনের চেষ্টা থাকে আমার। একজন রন্ধনশিল্পী হিসাবে আমার সুমি’স কিচেনের মাধ্যমে রান্না শিখতে ইচ্ছুক তাদেরকে নানা ধরণের রান্না শিখতে সহায়তা করছি। এছাড়াও আমার রান্নার ইউটিউব চ্যানেল আছে।
![](http://www.ittefaq.com.bd/assets/images/news_images//2017/06/07/for_details/1496831106_2.jpg)
মিডিয়া এবং রন্ধনশিল্প, কিভাবে দেখেন ?
রান্না শিল্পকর্ম। এটি সুন্দর করে উপস্থাপন করতে হয়। পুরো রান্না যদি ঠিকঠাক না করেন, দেখতে না ভাল লাগলে খেতেও তো মজা হবে না। সব প্রোপারলি করতে হবে। শুধু দেখার জন্য না, তা খেতেও সুন্দর হতে হবে। টিভি শোতে অল্প সময়েও আমাকে রান্না করতে হয়, কিছু টেকনিক ফলো করতে হয়। আমি বলি, আগে ঠিকঠাক রান্না করে তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মিডিয়া উপস্থাপন করাই হলো সেই কৌশল।
সামনে কী করতে চাচ্ছেন ?
ভাল কাজ করতে চাই। যাতে মানুষ পছন্দ করেন, উৎসাহ দেন এমন কিছু কাজ করতে চাই। ফুড হাইজিনটা মেইনটেইন করতে চাই। ভাল মনে কাজ করে যেতে চাই।
কৃতজ্ঞতায়: ইত্তেফাক