হার মানাবে ফিল্মের চিত্রনাট্যকেও। মৃত্যুকে ফাঁকি দেয়াটাকে তিনি যেন অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছিলেন। একবার নয়, দু’বার নয়— ফিদেল কাস্ত্রোকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল ৬৩৪ বার। বলাই বাহুল্য, প্রতিবারই ঘাতকের হাত এড়িয়ে গেছেন তিনি। সেই কারণেই কাস্ত্রো ৮০ বছরের জন্মদিনে বলতে পারেন, ‘৮০ বছরে পৌঁছাতে পেরে আমি সত্যিই খুশি। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর যে প্রতিবেশী (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) প্রতিদিন আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূলত তাদের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-কে দিয়েই এই হত্যার চেষ্টা চালাতো। এই চেষ্টাগুলোর বেশির ভাগই করা হয়েছিল ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৩ সালের মধ্যে। পাশাপাশি তাঁকে গদিচ্যুত করতে ‘অপারেশন মঙ্গুজ’ নামে একটি ছক কষেছিল আমেরিকা। এই চেষ্টাগুলোর বেশিরভাগকেই খুব কাছ থেকে দেখেছেন কাস্ত্রোর নিরাপত্তারক্ষী ফ্যাবিয়ান এসকালান্তে।
তিনি জানিয়েছিলেন, কখনও কাস্ত্রোর চুরুটের মধ্যে বিস্ফোরক দ্রব্য রাখা হয়েছে। কখনো ‘স্লো পয়েজনিং’ করতে তার জুতো ও চুরুটের মধ্যে বিষ রাখা হয়েছে। খাবারে বিষ মেশানোর চেষ্টা তো অজস্রবার করা হয়েছে। তার ব্যবহৃত কলমে বিষযুক্ত সূ্ঁচ রেখে এবং পোশাকে জীবাণু ছড়িয়েও তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে সিআইএ। তবে সবচেয়ে মারাত্মক পরিকল্পনা হিসেবে ফ্যাবিয়ানো যেটাকে উল্লেখ করেছিলেন, সেই চেষ্টার অংশ ছিলেন কাস্ত্রোর স্ত্রী মিরতা। কোল্ডক্রিমের কৌটোয় বিষাক্ত ক্যাপসুল। কিন্তু এ ষড়যন্ত্রের কথা জেনে ফেলেন কাস্ত্রো। তিনি মিরতার হাতে পিস্তল তুলে দিয়ে তাকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করতে বলেন। মিরতা তা পারেননি।
২০০০ সালে পানামা সফরে গেছিলেন কাস্ত্রো। সেখানেও তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। যে মঞ্চে তার বক্তৃতা দেয়ার কথা ছিল, সেখানে ৯০ কেজি বিস্ফোরক রাখা হয়। সেই চেষ্টাও সফল হয়নি। সাধে কী আর কাস্ত্রো বলেছেন, ‘হত্যার চেষ্টা এড়িয়ে যাওয়ার যদি কোনো অলিম্পিক ইভেন্ট থাকত, তাহলে নির্ঘাত তাতে সোনা জিততাম আমি।’