এইচ এম মুশফিকুর রহমান: প্রতি বছরের মতো এ বছরও আমাদের দ্বারে উপস্থিত হয়েছে পবিত্র রমাদান। খোশ আমদেদ মাহে রমাদান। আরবি বর্ষপঞ্জীর মধ্যে রমাদান শ্রেষ্ঠতম মাস। আরবি বারো মাসের মধ্যে রমাদান নবম মাস। বছরের বাকি এগারো মাসের তুলনায় এ মাসটির ফজিলত ও বরকত অনেক বেশি। কুরআনে রমাদান মাসের নাম উল্লেখ আছে : বছরে বারোটি মাস। কিন্তু আল কুরআনে রমাদান ছাড়া অন্য কোনো মাসের নাম উল্লেখ করা হয়নি। শুধু রমাদান মাসের নাম উল্লেখ রয়েছে। কুরআনের বাণী, ‘রমাদান মাস, যাতে কুরআন নাজিল করা হয়েছে।’ [সূরা বাকারা : ১৮৫]
রমাদান কুরআন নাজিলের মাস : আল কুরআন হলো পবিত্র আত্মা জিব্রাঈল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর অবতীর্ণ আল্লাহর সর্বশেষ কিতাব। এটি ইসলামী জীবন দর্শনের মূল উৎস। এতে আছে মানুষের জীবন চলার যাবতীয় প্রয়োজনীয় নিয়মাবলি, নির্দেশনা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের মৌলিক তথ্য। কুরআন মানবরচিত কোনো গ্রন্থ নয়। এর রচয়িতা ও রূপকার গোটা বিশ্ব জাহানের অধিপতি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। তিনি এ কিতাব সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। আর এ কুরআন রমাদান মাসে অবতীর্ণ হয়। আল্লাহ তায়ালার বাণী, ‘রমাদান মাস, যাতে কুরআন নাজিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলি ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে।’ [সূরা বাকারা : ১৮৫]
রমাদান আল্লাহর মাস : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘শাবান আমার মাস, আর রমাদান হলো আল্লাহর মাস’ (মা’সাবাতা বিস্সুন্নাহ)। রমাদান মাসে সিয়াম পালন করলে আল্লাহ তায়ালা প্রতিদান ঘোষণা করেছেন এভাবে : ‘মানুষের প্রত্যেক আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করা হয়। একটি নেকির সওয়াব দশ গুণ থেকে সাতাশ গুণ পর্যন্ত। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, কিন্তু সিয়ামের ব্যাপারটা ভিন্ন। কেননা তা একমাত্র আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর বিনিময় দেবো। বান্দা একমাত্র আমার জন্যই নিজের প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং পানাহার পরিত্যাগ করেছে।’ [সহিহ মুসলিম : ১১৫১]
রমাদান সিয়াম পালনের মাস : ইসলামের পাঁচটি রুকনের একটি হলো সিয়াম। আর রমাদান মাসে সিয়াম পালন করা ফরজ। সে জন্য রমাদান মাসের প্রধান আমল হলো সুন্নাহ মোতাবেক সিয়াম পালন করা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে।’ [সূরা আল-বাকারাহ : ১৮৫]
রমাদান সালাতুত তারাবি পড়ার মাস : সালাতুত তারাবি পড়া এ মাসের অন্যতম আমল। তারাবি পড়ার সময় তাঁর হক আদায় করতে হবে। হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াব হাসিলের আশায় রমাদানে কিয়ামু রমাদান (সালাতুত তারাবি) আদায় করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে’ [সহিহ আল-বুখারি : ২০০৯]
রমাদান সাহরি খাওয়ার মাস: সাহরি খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে এবং সিয়াম পালনে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাদিসে এসেছে, ‘সাহরি হলো বরকতময় খাবার। তাই কখনো সাহরি খাওয়া বাদ দিয়ো না। এক ঢোক পানি পান করে হলেও সাহরি খেয়ে নাও। কেননা সাহরির খাবার গ্রহণকারীকে আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর ফেরেশতারা স্মরণ করে থাকেন।’ [মুসনাদ আহমাদ : ১১১০১]
রমাদান ইফতার করার মাস : সময় হওয়ার সাথে সাথে ইফতার করা বিরাট ফজিলতপূর্ণ আমল। কোনো বিলম্ব না করা। কেননা হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করবে, সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে, খেজুর না পেলে পানি দিয়ে ইফতার করবে। কেননা পানি হলো অধিক পবিত্র। ’ [সুনান আবু দাউদ : ২৩৫৭]
রমাদান ইফতার করানোর মাস : অন্যকে ইফতার করানো একটি বিরাট সাওয়াবের কাজ। প্রতিদিন কমপক্ষে একজনকে ইফতার করানোর চেষ্টা করা দরকার। কেননা হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো সিয়াম পালনকারীকে ইফতার করাবে, সে তার সমপরিমাণ সাওয়াব লাভ করবে, তাদের উভয়ের সাওয়াব হতে বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না।’ [সুনান ইবন মাজাহ : ১৭৪৬]
রমাদান রহমতের মাস : মুমিনদের জন্য অধিকতর রহমত ও আমলের মাস হলো রমাদান। আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘রমাদান মাস শুরু হলেই রহমতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়।’ [সহিহ মুসলিম : ২৫৪৮]
রমাদান মাগফিরাতের মাস : আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, এক জুমা থেকে আরেক জুমা এবং এক রমাদান থেকে আরেক রমাদান মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহসমূহকে মুছে দেয় যদি সে কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে।’ [সহিহ মুসলিম : ৮৯৬৬]
রমাদান নাজাতের মাস : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ইখলাস নিয়ে অর্থাৎ একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে সন্তুষ্টি করার জন্য রমাদানে সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।’ [সহিহ বুখারি : ২০১৪]
রমাদান শয়তানকে বেড়ি পরানোর মাস : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রমাদান-বরকতময় মাস তোমাদের দুয়ারে উপস্থিত হয়েছে। পুরো মাস সিয়াম পালন আল্লাহ তোমাদের জন্য ফরজ করেছেন। এ মাসে জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। দুষ্ট শয়তানদের এ মাসে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে দেয়া হয়। এ মাসে আল্লাহ কর্তৃক একটি রাত প্রদত্ত হয়েছে, যা হাজার মাস থেকে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে বঞ্চিত হলো (মহাকল্যাণ হতে)। ’ [সুনান আত-তিরমিজি : ৬৮৩]
রমাদান ইবাদতের সওয়াব বহুগুণ বাড়ানোর মাস: অন্যান্য মাসের তুলনায় রমাদান মাসের ইবাদতের সাওয়াব অনেক বেশি। হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি এ মাসে নফল ইবাদত করল, সে যেন অন্য মাসের ফরজ ইবাদত পালন করল। আর যে এ মাসে একটি ফরজ পালন করল, সে যেন অন্য মাসের ৭০টি ফরজ ইবাদত করল।’
রমাদান জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা রমাদান মাসের প্রত্যেক দিবস ও রজনীতে অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। আর প্রত্যেক মুমিন বান্দার একটি করে দোয়া অবশ্যই কবুল করেন।’ [মুসনাদে আহমদ, হাদিস-৭৪৫০, মুসনাদে বাযযার, হাদিস ৯৬২]
রমাদান জান্নাতগুলোর দরজা খোলা ও জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধের মাস : আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘রমাদান মাসের শুভাগমন উপলক্ষে জান্নাতের দরজাগুলো উন্মুক্ত করে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস-১৮৯৮ (১/২৫৫), সহিহ মুসলিম, হাদিস, ১০৭৯ (১/৩৪৬) ]
মাদান লাইলাতুল কদরের মাস : আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে মুসলিম উম্মাহর জন্য রমাদান মাসে আরেকটি বিশেষ দান হলো, এক হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম রজনী লাইলাতুল কদর। এই রজনী এত মর্যাদাপূর্ণ যে, এক হাজার মাস ইবাদত করলেও যে সাওয়াব হতে পারে, লাইলাতুল কদরের ইবাদতে তার চেয়ে বেশি সাওয়াব পাওয়া যায়। তাই এই রাতের কল্যাণ হতে বঞ্চিত হওয়া চরম দুর্ভাগ্যের বিষয়। আল্লাহ তায়ালা এ রাত সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন, ‘কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ [সূরা কদর : ৪]
রমাদান ইতিকাফ করার মাস : ইতিকাফ অর্থ অবস্থান করা। অর্থাৎ মানুষ থেকে পৃথক হয়ে সালাত, সিয়াম, কুরআন তিলাওয়াত, দোয়া, ইসতিগফার ও অন্যান্য ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্যে একাকী কিছু সময় যাপন করা। এ ইবাদতের এত মর্যাদা যে, প্রত্যেক রমাদানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমাদানের শেষ দশ দিন নিজে এবং তাঁর সাহাবিগণ ইতিকাফ করতেন। আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, ‘প্রত্যেক রমাদানেই তিনি শেষ দশ দিন ইতিকাফ করতেন। কিন্তু জীবনের শেষ রমাদানে তিনি ইতিকাফ করেছিলেন বিশ দিন।’ [সহিহ আল বুখারি : ২০৪৪]
রমাদান মাসে ওমরাহ আদায় করা হজ করার সমতুল্য : রমাদান মাসে একটি ওমরাহ করলে একটি হজ আদায়ের সমান সাওয়াব হয়। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রমাদান মাসে ওমরাহ করা আমার সাথে হজ আদায় করার সমতুল্য।’ [সহিহ আল বুখারি : ১৮৬৩]
রমাদানে সিয়াম পালন বছরের দশ মাস সিয়াম পালন তুল্য : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমাদান মাসে সিয়াম পালন করল- রমাদানের এক মাস সিয়াম পালন দশ মাস সিয়াম পালনের সমতুল্য। আর ঈদুল ফিতরের পর (শাওয়াল মাসের) ছয় দিন সিয়াম পালন যেন গোটা বছরের সিয়াম পালন হয়ে গেল।’ [আহমাদ : ২১৯০৬]
রমাদান ফিতরা আদায়ের মাস : এ মাসে সিয়ামের ত্রুটি-বিচ্যুতি পূরণার্থে ফিতরা দেয়া আবশ্যক। ইবনে উমর রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদের সালাত আদায়ের আগে ফিতরা আদায় করার আদেশ দিলেন।’ [সহিহ আল বুখারি : ১৫০৩]
রমাদান তাকওয়া অর্জনের মাস : তাকওয়া এমন একটি গুণ, যা বান্দাহকে আল্লাহর ভয়ে যাবতীয় পাপ কাজ থেকে বিরত রাখে এবং তাঁর আদেশ মানতে বাধ্য করে। আর রমাদান মাস তাকওয়া নামক গুণটি অর্জন করার এক বিশেষ মওসুম। কুরআনে এসেছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে করে তোমরা এর মাধ্যমে তাকওয়া অবলম্বন করতে পারো।’ [সূরা আল বাকারাহ : ১৮৩]
রমাদান বদর যুদ্ধের মাস : আল্লাহর মুমিন বান্দাদের কাছে রমাদান বিজয়ের মাস। দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমাদান মুসলমানেরা মদিনার দক্ষিণে বদরের প্রান্তরে প্রথম যুদ্ধে বিজয় লাভ করে। এ যুদ্ধ সংঘটিত হয় ৬২৪ সালে। এ যুদ্ধে মাত্র ৩১৩ জন মুসলিম মুজাহিদ মক্কার এক হাজার কাফের সেনার মোকাবেলায় মহান আল্লাহর সরাসরি মদদে বিজয় লাভ করে। বদরযুদ্ধে আবু জাহেল, উতবা, শায়বাসহ মোট ৭০ জন কাফের নিহত হয়। আরো ৭০ জন কাফের মুজাহিদদের হাতে বন্দী হয়। অন্যদিকে ১৪ জন মুসলিম মুজাহিদ বীরবিক্রমে লড়াই করে শাহাদাতের গৌরব অর্জন করেন।
রমাদান মক্কা বিজয়ের মাস : অষ্টম হিজরির ২০ বা ২১ রমাদান জুমাবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম মক্কা বিজয় করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় প্রবেশ করে কোনো প্রতিশোধ গ্রহণের কথা বলেননি। তিনি এ মর্মে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেনÑ এক. যারা আপন ঘরের দরজা বন্ধ করে থাকবে তারা নিরাপদ। দুই. যারা আবু সুফিয়ানের ঘরে থাকবে তারাও নিরাপদ। তিন. যারা কাবাগৃহে আশ্রয় নেবে তারাও নিরাপদ।
উপসংহার : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আমার উম্মত যদি মাহে রমাদানের গুরুত্ব বুঝত, তাহলে সারা বছর রমাদান কামনা করত।’ [মাজমাউজ যাওয়ায়েদ-৩য় খণ্ড পৃষ্ঠা ১৪১] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগে থেকেই রমাদান মাসের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতেন এবং রজব মাসের চাঁদ দেখে মাহে রমাদান প্রাপ্তির আশায় বিভোর থাকতেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবেগভরে পরম করুণাময়ের দরবারে প্রার্থনা করতেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি রজব ও শাবানের মধ্যে আমাদের জন্য বরকত দান করুন এবং আমাদের রমাদান পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’ [মুসনাদে আহমাদ : ২৩৪৬]
প্রকৃতপক্ষে মাহে রমাদান মুসলমানদের জন্য একটি বার্ষিক প্রশিক্ষণ কোর্স, যার মাধ্যমে সিয়াম পালনকারীর জীবন প্রভাবিত হয়। মাহে রমাদানের অসীম কল্যাণ ও বরকত লাভের প্রত্যাশার জন্য আগে থেকে সবার দৈহিক ও মানসিকভাবে ইবাদতের প্রস্তুতি গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। মাহে রমাদানের পবিত্রতা রক্ষার্থে মাসব্যাপী ইবাদাত-বন্দেগি তথা সেহরি, ইফতার, তারাবি, পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত, ইতিকাফ, তাহাজ্জুদ, দান-সাদকা, তওবা-ইসতেগফার প্রভৃতি আদায়ের সামগ্রিক প্রস্তুতি নেয়া উচিত।