প্রচ্ছদ স্বাস্থ্য শীতে গাজর কেন খাবেন?

শীতে গাজর কেন খাবেন?

0
নারী ডেক্স: ইদানিং শীতের তীব্রতা এতোই বুদ্ধি পেয়েছে যার কারণে জ্বর-সর্দি কাশিতে জর্জরিত হচ্ছেন অনেকই। প্রচন্ড এই শীতে নিজেকে চনমনে ও রোগমুক্ত রাখতে হলে আমাদের সবাইকে প্রতিদিন অন্তত এক গ্রাস গাজরের রস পান করা জরুরী। এতে শরীরের ভেতর শক্তিশালী হয়ে উঠবে এবং যে ছোট-বড় কোনো রোগ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না।

গাজরের উপকারিতা
১. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায় : 
গাজরের উপস্থিত ডায়াটারি ফাইবার শরীরে প্রবেশ করার পর হজমে সহায়ক পাচক রসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে বদহজম ও গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা কমতে একেবারে সময়ই লাগে না। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতাও বাড়তে শুরু করে।
২. লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ায় : বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে লিভারের অন্দরে থাকা বর্জ্য পদার্থদের বের করে দিয়ে শরীরে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গটির কর্মক্ষমতা বাড়াতে গাজরের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে।
৩. ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে : ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে গাজর। গাজরের থাকা ভিটামিন ও মিনারেল ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে ডায়াবেটিস রোগ ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগটুকু পায় না।
৪. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় : ১০০ গ্রাম গাজরের অন্দরে থাকে দিনের চাহিদার প্রায় ৩৩ শতাংশ ভিটামিন এ, ৯ শতাংশ ভিটামিন সি এবং ৫ শতাংশ বি৬। সেই সঙ্গে থাকে প্রচুর মাত্রায় থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই সবকটি উপাদান হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে শূন্য এসে দাঁড়ায়।
. ভিটামিনের মাত্রা বাড়বে : দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটানোর পাশপাশি সার্বিকভাবে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে গাজরের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ এই সবজিটির অন্দরে থাকা ভিটামিন এ এবং উপকারি বিটা বিটা ক্যারোটিন চোখের ক্ষমতা মারাত্মক বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে ছানি পরার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমায়।
৬. ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে : গাজরে উপস্থিত পটাশিয়াম শরীরে প্রবেশ করার পর সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে সোডিয়াম-পটাশিয়াম লেভেলকে ঠিক মাত্রায় নিয়ে আসে। ফলে রক্তচাপ স্বাভাবিক হতে একেবারেই সময় লাগে না। তাই তো যাদের পরিবারে এমন মারণ রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাদের সুস্থ থাকতে রোজের ডেয়েটে গাজর থাকা মাস্ট!
৭. হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে : বুড়ো বয়সে আর্থ্রাইটিস মারে যদি শয্যাশায়ী হতে না চান, তাহলে এখন থেকেই গজরের রস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। কারণ এর মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম, হাড়ের শক্তি এতটা বাড়িয়ে দেয় যে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড় দুর্বল হয়ে পরার আশঙ্কা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে নানাবিধ হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।
৮. ত্বকের খেয়াল রাখে : শীতকাল মানেই স্কিনের আদ্রতা হারিয়ে যাওয়া এবং সেই সঙ্গে নানাবিধ ত্বকের রোগের মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা। এমন পরিস্থিতিতে ত্বককে বাঁচাতে পারে একমাত্র গাজর। কারণ এই সবজিটির মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের অন্দরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানের শরীর থেকে বার করে দেয়। সেই সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। তবে এখানেই শেষ নয়, গাজরের অন্দরে থাকা একাধিক ভিটামিন এবং মিনারেল ড্রাই স্কিনের সমস্যা দূর করতে, কালো কালো ছোপ দাগ কমাতে এবং বলিরেখা ভ্যানিশ করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৯. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টর ঘাটতি দূর করে : শরীর থেকে সব ধরনের টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়ার মধ্যে দিয়ে ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতে এই উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে তোলে যে ছোট-বড় কোনো রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।