প্রচ্ছদ ধর্ম ফিতরার নিয়ম-কানুন

ফিতরার নিয়ম-কানুন

0
রোজাদার কখনও কখনও অনিচ্ছাকৃত ভুল-ভ্রান্তি করে ফেলেন। এ জন্য মহান রাব্বুল আলামিন তার প্রিয় বান্দা-বান্দির জন্য সুন্দর ব্যবস্থা করে রেখেছেন রমজান শেষে। আর তা হল, ‘সদকাতুল ফিতর’। এ সদকায় ফিতরের মাধ্যমে রোজার ভুলগুলো মাফ হয়ে যায়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হুজুর (সা.) সদকায় ফিতর আদায় করার জন্য খুব তাকিদ দিয়েছেন, যা রোজাদারের, অশালীন কথা ও কাজে রোজার যে ক্ষতি হয়েছে তা দূর হয়ে যায়।
সুতরাং যে ব্যক্তি ফিতরা ঈদের পূর্বে আদায় করে, তা জাকাত হিসেবে কবুল হবে। আর যদি ঈদের পর আদায় করে তাহলে তা সাধারণ সদকা হবে। (আবু দাউদ : ১৬০৯) সদকায় ফিতর ওয়াজিব হওয়ার দু’টি উদ্দেশ্য।
প্রথমত রোজার মধ্যবর্তী সময়ে ভুল-ত্রুটির ক্ষতিপূরণ।

দ্বিতীয়ত অসহায় মিসকিনদের জন্য ঈদের দিন রিজিকের বন্দোবস্ত করা। যাতে সেও সবার সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারে। আর এ জন্যই প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, অসহায় নিঃস্বদের পিছনে এ পরিমাণ ব্যয় কর যেন তার এদিনে অন্যের কাছে চাইতে না হয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) ঈদের তিনদিন আগে সদকায় ফিতর আদায় করতেন।

সদকায় ফিতর কার ওপর ওয়াজিব
যার কাছে প্রয়োজনীয় সম্পদ ছাড়াও এ পরিমাণ ধনসম্পদ থাকে, যা থেকে জাকাত দেয়া ওয়াজিব। এমন ব্যক্তির জন্য সদকায় ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। সদকায় ফিতর ও জাকাতের ভেতর সামান্য পার্থক্য রয়েছে। জাকাতের ক্ষেত্রে সম্পদ মালে বৃদ্ধি পায় এমন সম্পদ হতে হবে। কিন্তু ফিতরার ক্ষেত্রে এমনটি নয়। জাকাতের সম্পদ পূর্ণ এক বছর অতিবাহিত হতে হয়, কিন্তু সদকাতুল ফিতর তাৎক্ষণিক ওয়াজিব হয়। দুটোর জন্য সম্পদ ঋণ থেকে মুক্ত ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত থাকতে হবে। (তাহতায়ী : ৩৯৪)

অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের পক্ষ থেকে সদকা
শিশুর সদকায় ফিতর পিতার পক্ষ থেকে আদায় করা ওয়াজিব। আর যদি সন্তান নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়, তাহলে তার সম্পদ থেকে সদকায় ফিতর আদায় করতে হবে। এমনিভাবে পাগল সন্তানের সদকায় ফিতরের বিধানও। (ফতওয়ায় আলমগির : ১/১৯২)

প্রাপ্তবয়স্ক ছেলের পক্ষ থেকে সদকা
সন্তানের প্রাপ্তবয়স হওয়ার পর পিতার পক্ষ থেকে সদকায় ফিতর আদায় করা ওয়াজিব নয়। তবে পিতা যদি সন্তানের পক্ষ হয়ে আদায় করে দেন, তাহলে তা আদায় হয়ে যাবে। তেমনি স্বামী স্ত্রীর সদকায় ফিতর আদায় করেন, তাহলেও তা হয়ে যাবে। (দূররে মুখতার : ৩/২৮৫)
এ বছরের সদকায় ফিতরের পরিমাণ ৬৫ টাকা। উত্তম হল, এক ব্যক্তির সদকায় ফিতর একব্যক্তিকে দেয়া। কেননা একব্যক্তির সদকায় ফিতর কয়েকজনকে দেয়া মাখরুহে তানিজিহি। তবে একাধিক সদকায় ফিতর একব্যক্তিকে দেয়া যাবে। (ফতওয়ায় আলমগির : ৩/২৯১)

লেখক : প্রাবন্ধিক ও হাফেজ, মাওলানা, মুফতি ও দেওবন্দ ফারে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here