রাজু আনোয়ার: লম্বা ঝুলের কামিজ, তার সঙ্গে কটি। কোটিতে নানা ধরনের সুতা, চুমকি ও জরির জমকালো কারুকাজে তরুণীদের নজরকাড়া এ পোশাকটির নাম সারারা। বিখ্যাত হিন্দি চলচ্চিত্রকার করণ জোহরের ‘মেরে ইয়ার কি শাদি হ্যায়’ সিমেমার জনপ্রিয় গান ‘সারা-রা, সারা-রা, মে হু এক সারা-রা’ গানের সাথে যে ডিজাইনের পোশাক পরে দর্শকের মাতিয়ে তোলেছেন অভিনেত্রী সুস্মিতা শেঠি সেই পোশাক ‘সারারা’ এবার ঈদের বাজারে জায়গা করে নিয়েছে পছন্দের তালিকায় সবার শীর্ষে।
রাজধানীর অভিজাত শপিংমল গুলোতে বিশেষ জায়গা করে নেয়া ভারতীয় ডিজাইনের সুতা, রঙের বাহারে ঝলমলে ও নান্দনিক এ পোশাকটি বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পযর্ন্ত।
জমকালো এ পোশাকটি জর্জেট আর সিল্কের ওপর জরি-চুমকি-পাথরের কটিওলা লং জামার সঙ্গে সালোয়ারেও রয়েছে প্রচুর কাজ। সঙ্গে হালকা কাজের চিকন পাড়ের ওড়না। বিক্রেতারা জানান, এবারের ঈদের বাজারে তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে স্থান করে নিয়েছে ‘সারারা’ নামের এ পোশাকটি। তবে শুধু বড় নয় ছোটদের জন্যও সারারা পাওয়া যাচ্ছে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে।
বসুন্ধরা শপিং সেন্টারের ‘বুটিকস’ শোরুমের ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান বাংলামেইলকে বলেন, বুটিকসের কালেশানের মধ্যে সারারা পোশাকটি পাওয়া যাবে ৫ থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে।
এবারের ঈদে সারারা একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে বিরাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেচা-বিক্রি এখনও তেমন জমে ওঠেনি তাই প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার পোশাক। সারারার প্রায় ১০ ভাগের একভাগ বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য পোশাক।
এদিকে বসুন্ধরা শপিং সেন্টারের ‘নামেসা’ বিপনী বিতানের বিক্রয় প্রতিনিধি রাসেল বাংলামেইলকে জানান, সারারার এ পোশাকগুলো সাধারনত ফ্রি সাইজে থাকার কারণে মোটা-চিকন সবাই পরতে পারে। সাড়ে ৪ থেকে ৫ ফিটের নারীদের জন্য এ পোশাক। প্রয়োজনে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ করে বডি ফিট করে নেওয়া যায়। টাকা দিলে আমরাও এটা করে দেই।
রাসেল জানায়, এখন বিক্রি তেমন হচ্ছে না। তবে ১০ রোজার পর থেকে বিক্রি বেড়ে যাবে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
একই মার্কেটের ‘দারুল জান্নাত’র শোরুম ঘুরে দেখা গেছে এ শোরুমের ‘সারারা’ পোশাকটি অন্যদের থেকে কিছুটা আলাদা এবং উন্নত মানের। এখানকার বিক্রয় প্রতিনিধি কাইয়ূম বাংলামেইলকে বলেন, এখন পযর্ন্ত তাদের শোরুমে ৬০ হাজার টাকা দামের সারারা উঠানো হয়েছে। তবে কিছু দিনের মধ্যেই ১ লাখ টাকা দামের সারারাও এখানে পাওয়া যাবে।
কাইয়ূম জানান, সারা-রা কামিজের ওপর যে কটি থাকছে তা মূলত ভেলভেট বা মখমলের তৈরি। এ কারণেই এ পোশাকের দামটা একটু বেশি।
এদিকে নিজের ও বোনের মেয়ে নিয়ে শপিং করতে ধানমণ্ডি থেকে এখানে আসছেন শিরিন আক্তার। তিনি বাংলামেইলকে বলেন, আসলে ‘সারারা’ এখন মেয়েরা বেশি পছন্দ করছে। তবে এ সুযোগ নিয়ে বিক্রেতারাও ইচ্ছে মতো দাম হাঁকছে। বলতে গেলে এটা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে।
এবারের ঈদে ‘সারারা’ পোশাক ছাড়াও তরুণীরা ঝুঁকছেন ‘বলিউড গাউন’র দিকে। এটি ‘ফ্লোর টাচ গাউন’ ও ব্রাইডাল গাউন হিসেবে পরিচিত। এই পোশাকগুলোও পছ্ন্দ করছেন অনেকে। এছাড়া পছন্দের তালিকায় আছে ভারতীয় সিরিয়ালের কিরনমালা, জরি ও সূতার কাজ করা বাহারি ডিজাইনের লং কামিজ। সিরিয়াল দেখেই পোশাক নির্বাচনের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে বলে জানালেন বিক্রেতারা।
বসুন্ধরা শপিং সেন্টার ছাড়াও অরচার্ট পয়েন্ট, নিউমার্কেট, পলওয়েল মার্কেট, মৌচাক মার্কেট ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে। সবখানে পছন্দের তালিকার শীর্ষে আছে সারারা। ঈদকে সামনে রেখে এটি সরাসরি ভারতের বোম্বে থেকে আমদানি করা হচ্ছে বলে জানানেল ব্যবসায়ীরা।