প্রচ্ছদ আন্তর্জাতিক সৌদিই লেবাননের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে: হিজবুল্লাহ

সৌদিই লেবাননের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে: হিজবুল্লাহ

0
অনলাইন ডেস্ক: লেবাননি প্রধানমন্ত্রী সাদ আল-হারিরিকে আটকে রেখে তাকে জোর করে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করিয়ে সৌদি আরব লেবাননের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ। লেবাননকে অস্থিতিশীল করতে সৌদি আরব এসব করছে বলে শুক্রবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে দাবি করেন তিনি। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন অন্য দেশ ও গোষ্ঠীগুলোকে লেবাননকে ব্যবহার করে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ‘ছায়া যুদ্ধ’ উসকে দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।
নাসরুল্লাহ বলেন, ‘বিষয়টা হলো, তাকে (সাদ) আটকে রাখা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত লেবাননে ফিরে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। এর মাধ্যমে সৌদি আরব ও এর কর্মকর্তারা লেবানন এবং হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।’ গত সপ্তাহে সৌদি আরবের এক মন্ত্রী লেবানন সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। নাসরুল্লাহ বক্তব্যকে তার জবাব হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সাদকে ‘আটকে রেখে’ সৌদি আরব লেবাননের সব নাগরিককে অপমান করেছে বলেও মন্তব্য করেন এই হিজবুল্লাহ নেতা। সৌদি আরব ইসরাইলকে লেবাননে হামলায় উৎসাহিত করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে না দিয়ে তিনি বলেন, তেমনটা হলে ইসরাইলকেও জন্য এর জন্য চরম মূল্য দিতে হবে। ইসরাইলের উদ্দেশ্যে নাসরুল্লাহ বলেন, ‘যেকোনো ধরনের ভুল পদক্ষেপ কিংবা পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার চেষ্টার ব্যাপারে আমি তাদের সতর্ক করছি।’ অন্যান্য ফ্রন্টের মতো লেবাননেও সৌদি আরব পরাজিত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শুক্রবার লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন সৌদি আরবের একদল প্রতিনিধিকে বলেছেন, ‘সাদকে অবশ্যই লেবাননে ফিরে আসতে হবে।’ সৌদি আরবে থাকা অবস্থায় সাদের পদত্যাগের ঘোষণা ও তার পরবর্তী পরিস্থিতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন আউন। শুক্রবার ফরাসী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতেও সাদকে আটকে রাখার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, সাদ তার ইচ্ছানুযায়ী চলাফেরা করতে এবং লেবাননে তার ওপর অর্পিত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবেন বলে ফ্রান্সের আশা।
গত সপ্তাহের শুরুতে ‘প্রাণনাশের আশঙ্কার’ কথা জানিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ। এজন্য ইরান ও হিজবুল্লাহকে দায়ী করেন তিনি। ২০০৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালনকারী সাদ আগে থেকেই সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি ফের লেবাননের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন অন্য দেশ ও গোষ্ঠীগুলোকে লেবাননকে ব্যবহার করে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ‘ছায়া যুদ্ধ’ উসকে দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, ওয়াশিংটন লেবাননের স্বাধীনতাকে জোর সমর্থন দিচ্ছে এবং সাদ আল-হারিরিকে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী অংশীদার হিসেবেই বিবেচনা করছে। টিলারসনের বিবৃতিতে সাদকে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে। সংকট শুরু হওয়ার প্রায় এক সপ্তাহ পর এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সতর্কবার্তা দেন।
শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, সাদকে রিয়াদে আটকে রাখা হয়েছে এমন কোনো ইঙ্গিত তারা পাননি। যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টিতে নজর রাখছে বলেও জানান তিনি।’ লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হারিরিকে দেশে ফিরে আসার তাগিদ দিয়েছেন মার্কিন টিলারসন। তিনি বলেন, হারিরির ফেরার মধ্য দিয়ে সংকট খোলাসা করা যাবে এবং সরকার নিয়মিত কার্যাদি সম্পন্ন করতে হবে।
-রয়টার্স ও বিবিসি।